নবাবগঞ্জে বিলুপ্তর পথে বাঁশ শিল্প
অলিউর রহমান মেরাজ নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় বাঁশ বাগানের পরিমাণ দিন দিন অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। যার ফলে পরিবেশের যেমন, ক্ষতি হচ্ছে তেমনি আর্থিক লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা।
বাঁশকে গরিবের কাঠ বলে আখ্যায়িত করা হয় কারণ গ্রামের গরীব মানুষ বাঁশ দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরী করে। আর বাঁশ গ্রামীণ কুটির শিল্পের প্রধান কাঁচামাল। শুধু তাই নয়, বাঁশ কাগজ ও রেয়ন শিল্পেরও প্রধান কাঁচামাল। দেশের অর্থনীতিতে বাঁশের গুরুত্ব অপরিসীম।
বাংলাদেশে প্রায় ৩৩ জাতের বাঁশ পাওয়া যায়। বন-জঙ্গলে মুলি, মিতিঙ্গা, ডলু ও নলি বাঁশ পাওয়া যায়। এসব বাঁশের ছিদ্র মোটা ও দেয়াল পাতলা। গ্রামে বরাক, বড়ুয়া, বেতুয়া, তললা, মাকলা, মরাল,বেঁড়া ইত্যাদি বাঁশ জন্মে। এসব বাঁশের ছিদ্র সরু ও দেয়াল মোটা।
স্থানীয় কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, আগে জমির দাম কিছুটা কম থাকায় বাঁশ ঝাড়গুলো সংরক্ষিত ছিলো। এখন জমির দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় বাঁশ ঝাড় কেটে জমি বিক্রি করা হচ্ছে। এসব জায়গায় গড়ে উঠেছে বসতিসহ নানা স্থাপনা। এছাড়া ইটভাটার জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে বাঁশ,বাঁশের গোড়া-মুথা।
বাঁশ বাগানের মালিক সাজেদুল ইসলাম বলেন, আগে আমাদের বাঁশ ঝাড় অনেক বড় ছিলো। এখন এর প্রতি গুরুত্ব না দেয়ায় অনেক কমে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানায়, ঝাড় কমে যাওয়ায় এখন বাঁশ আর সহজলভ্য নয়। এ কারণেই দিনে দিনে বাড়ছে বাঁশের দাম। কিছুদিন আগেও একটি বাঁশের দাম ছিলো ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এখন বেড়ে দাড়িয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা,এমন কি প্রকারভেদ অনুসারে ২শ-২শ ৫০টাকাও।
বাঁশ ব্যবসায়িরা জানান, ঝাড়গুলো নিধন হচ্ছে। পুনরায় জন্ম নিচ্ছে না। তাই আমাদের কিনতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বাঁশের আগের মতো ঝাড় নেই। পরিবেশ সুরক্ষা ও কৃষি সহায়ক উপাদান হিসেবে বাণিজ্যিক ভাবে বাঁশ চাষের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এলাকার জনগনদের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ চাষে উদ্বুদ্ধ করছে।
তিনি আরও জানান, বাঁশের ঝাড় পুনরায় স্থাপন করতে কি প্রযুক্তি লাগবে সেগুলো আমরা দিচ্ছি। এর মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি উৎসাহিত জনগন আর্থিকভাবে লাভবান হবে। স্বল্প পরিসরে হলেও বাড়ির আশপাশে বাঁশ বাগান সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়ার উপর জোর দিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
Comments
Post a Comment